আছে আলিশান বাড়ি, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ সম্পদ * ৬ ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার লেনদেন
দিনমজুর থেকে হঠাৎ কোটিপতি

 

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ব্যাংকিং চ্যানেলেও ইয়াবা ব্যবসার লেনদেন হচ্ছে। সাধারণ ব্যবসার মতোই ইয়াবা কেনাবেচার টাকা জমা পড়ছে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে।

দেশব্যাপী বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে টেকনাফের স্থানীয় শাখায় কোটি কোটি টাকা জমা হচ্ছে।

 

সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। ছয়টি ব্যাংকের কক্সবাজার ও টেকনাফ শাখায় কয়েকজন ইয়াবা গডফাদারের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। যাদের বেশ কয়েকজনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

আলাদীনের চেরাগ পাওয়ার মতো হঠাৎ ধনীর খাতায় নাম লেখানো এসব ইয়াবা ডন কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আলিশান বাড়ি ও বিপুল পরিমাণ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। যারা কিছুদিন আগেও ছিলেন দিনমজুর।

সিআইডি বলছে, ইয়াবা মাফিয়াদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা হতবাক করার মতো। কারণ কয়েকজন বড় মাপের ইয়াবা ডিলারের ব্যাংকে রীতিমতো টাকার পাহাড় জমেছে। সাধারণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বাইরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও মাদক বিক্রির টাকা লেনদেন হচ্ছে। এজন্য বেনামি মোবাইল সংযোগ ব্যবহার করে বেশিরভাগ টাকা আদান-প্রদান হচ্ছে বিকাশ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের রকেট অ্যাকাউন্টে।

 

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার একটি মাদক মামলার সূত্র ধরে দেশের অন্যতম বৃহৎ এক ইয়াবা নেটওয়ার্কের সন্ধান পায় সিআইডি। দীর্ঘ ৪ মাসের অনুসন্ধান শেষে ৯ ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের বিরুদ্ধে ২৯ আগস্ট টেকনাফ থানায় মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন থানায় কমবেশি ১০টি করে মামলা আছে। বেশিরভাগ মামলা মাদক, অস্ত্র ও অর্থ পাচার আইনে।

 

‘আলাদীনের চেরাগ’ হাতে হাতে : টেকনাফের নাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আলম স্থানীয় একটি সরকারি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। এলাকায় তিনি সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু শিক্ষকতার সীমিত আয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না সৈয়দ আলম। রাতারাতি ধনী হওয়ার নেশা পেয়ে বসে তাকে। তাই স্কুলশিক্ষকের পেশায় ইস্তফা দিয়ে ২০১১ সালে ইয়াবা ব্যবসায়ীর খাতায় নাম লেখান। টেকনাফের কুখ্যাত ইয়াবা ডন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। একপর্যায়ে জিয়ার পুরো ইয়াবা নেটওয়ার্ক দেখভালের দায়িত্বও পেয়ে যান।

এভাবে মাত্র তিন বছরের মাথায় সৈয়দ আলম বনে যান কোটিপতি। তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আভিজাত্য আর বিলাসী জীবন তার কাছে যেন স্বেচ্ছায় ধরা দেয়। নাজিরপাড়ার জীর্ণ পৈতৃক বাড়ি ভেঙে সেখানে বিশাল বাড়ি নির্মাণ করেন। শখের এ বাড়িতে তিনি খরচ করেন চার কোটি টাকা। সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, সৈয়দ আলমকে গ্রেফতারের জন্য তার বাড়িতে ঢুকতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। কারণ বাড়িটির সীমানাপ্রাচীর অনেকটাই দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো। সুরক্ষিত গেট দিয়েও ঢোকা সহজসাধ্য নয়।

 

বিশেষ কৌশলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, প্রতিটি কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও বিদেশি আসবাবপত্রে সুসজ্জিত। সাবেক স্কুলশিক্ষকের এমন আভিজাত্য দেখে বিস্মিত হন সিআইডির কর্মকর্তারা। তবে অভিযান ও মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু সৈয়দ আলম একা নন।

এই ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রায় সবাই কোটিপতি। এদের মধ্যে টেকনাফের আরেক ইয়াবা গডফাদার নুরুল হক ওরফে ভুট্টোর সম্পদ ও অর্থবিত্ত কল্পকাহিনীকেও হার মানায়। নাজিরপাড়ায় তার তিন তলা বাড়িটি পাঁচ তলা ফাউন্ডেশনের। পাশ্চাত্য নির্মাণশৈলীর এ বিশাল বাড়িতে ভূট্টো তার স্ত্রীকে নিয়ে একা থাকেন। পাশেই তার আরেকটি বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন বাবা ও ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

 

ইয়াবা গডফাদার ভুট্টোকে গ্রেফতারের বর্ণনা দিতে গিয়ে সিআইডির এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ভুট্টোর বাড়িতে ঢুকতেই আমাদের ঘাম ছুটে যায়। সুরক্ষিত বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার পর আমাদের মনে হয়, ভুল করে কোনো মন্ত্রী বা শিল্পপতির বাড়িতে চলে এসেছি। কারণ বাড়ির নির্মাণশৈলী থেকে শুরু করে ভেতরের আসবাবপত্রসহ সব কিছুতেই বিলাসিতার ছাপ। বাড়ির মূল ফটক তৈরিতেই খরচ হয়েছে অন্তত ২০ লাখ টাকা।

 

আরেক মাদক ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানের বাড়িটি প্রাসাদোপম। বিশাল এলাকাজুড়ে তার অভিজাত বাড়িতে বাইরের লোকজনের যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সুনসান অবস্থায় পড়ে থাকে বলে অনেকে এটাকে ভূতের বাড়িও বলেন। সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, এ বাড়ির সীমানায় ঢুকে আমরা পথ হারিয়ে ফেলার মতো অবস্থায় পড়েছিলাম। কারণ বাড়ির সীমানপ্রাচীর পার হয়ে ভেতরে ঢুকতেই আমাদের ২০ মিনিটের মতো সময় লেগে যায়। বাড়িটি দেখে ভারতের কুখ্যাত ধর্ষক বাবা রাম রহিমের বাংলোর কথা মনে হয়েছে।

 

দিনমজুর থেকে কোটিপতি : সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, টেকনাফে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া অনেকেই মাত্র ২-৩ বছর আগেও ছিলেন দিনমজুর। যাদের দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহ করতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হতো। যেমন- সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া ইয়াবা গডফাদার নুরুল হক ওরফে ভুট্টো ও তার ভাই নূর মোহাম্মদ মাত্র ৩ বছর আগেও এলাকায় দিনমজুরি করতেন। তাদের বাবা এজাহার মিয়া ছিলেন মুদি দোকানি।

 

কিন্তু এখন তাদের কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে যে পরিমাণ টাকা জমা আছে, তা শুনলে অনেকের কাছে আলাদীনের চেরাগ পাওয়া ছাড়া ভিন্ন কিছু মনে হবে না। তাদের ব্যাংক হিসাবের ছড়াছড়ি অবস্থা। আবার প্রতিটি ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা। সিআইডি বলছে, তারা ঠিক কত টাকার মালিক, তা জানতে দীর্ঘ তদন্তের প্রয়োজন। পুরো সিন্ডিকেটের সম্পদের তথ্য বের করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।

 

সিআইডি জানায়, সিন্ডিকেটের সব সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে তারা ছয়টি ব্যাংকের একাধিক হিসাবের তথ্য জানায়। এতে দেখা যায়, নূরুল হক ওরফে ভুট্টো ও তার ভাই নূর মোহাম্মদসহ বাবা এজাহার মিয়ার কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা জমা আছে। এর মধ্যে ভুট্টোর নামে টেকনাফে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় (হিসাব নম্বর ১০২১২২০০০১৩৯২) ৫৭ লাখ, তার ভাই নূর মোহাম্মদের নামে (হিসাব নং- ১০২১০২০০০০৮৫৯) ১ কোটি ১০ লাখ, সরকারি একটি ব্যাংকে ভুট্টোর নামে (হিসাব নং-২০০০১৩৯০৩) ২৯ লাখ ও তার ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে (নম্বর ২০০০১৩৩৬৭) ৫২ লাখ, সরকারি অপর একটি ব্যাংকে (হিসাব নং- ০৮৯৯৩৪০১৫২৮৮) ৮ লাখ এবং নূর মোহাম্মদের নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে (হিসাব নং- ২০৫০১৪৭০১০০২৮২৪১৫) ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা জমা আছে।

 

ভুট্টো ও নূর মোহাম্মদের বাবা মুদি দোকানি এজাহার মিয়ার ব্যাংকেও আছে টাকার পাহাড়। কারণ বাবা হয়েও দুই ছেলের সঙ্গে তিনিও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। এজাহার মিয়ার নামে বেসরকারি একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে মাত্র চার মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোটি টাকা জমা পড়ে। এছাড়া আরেকটি অ্যাকাউন্টে ৪০ লাখ ৭ হাজার ২৫৪ টাকা এবং এজাহার স্টোর নামে খোলা সরকারি একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে আছে ২৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে এসব টাকা জমা হয়।

 

অসংখ্য মোবাইল অ্যাকাউন্ট : শুধু ব্যাংক হিসাব নয়, লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে বিকাশ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অসংখ্য মোবাইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়। একাধিক এজেন্ট অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পায় সিআইডি। এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ছাড়াও শত শত অবৈধ সিমের মাধ্যমে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের রকেট ও বিকাশে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার অভিযান চালানোর সময় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহৃত অন্তত ৩৫০টি সিম উদ্ধার করা হয়। সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিকাশের এসব সিমে কে কোথা থেকে কত টাকা পাঠিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো টাকার সূত্র ধরে ইয়াবা সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

 

অভিনব ছদ্মবেশ : সিআইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানতে পারেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে অনেকটা নাটকীয় ছদ্মবেশে থাকেন এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী। এজন্য নিজের এলাকা ছেড়ে কেউ কেউ দূর-দূরান্তে গিয়ে ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু কোনো এলাকাতেই তারা ৩-৪ মাসের বেশি থাকেন না। যে এলাকায় তারা থাকেন, সেখানে বিশেষ কৌশলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ যুগান্তরকে বলেন, ইয়াবা ডন জিয়াউর রহমান ও নুরুল হক ওরফে ভুট্টোকে দেখলে কেউই তাদের মাদক ব্যবসায়ী বলে সন্দেহ করবে না। কারণ দাড়ি রেখে টুপি-পাঞ্জাবি পরে তারা অত্যন্ত ধর্মীয় আচারপূর্ণ জীবনযাপন করেন।

 

দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও দুস্থ অসহায় মানুষকে দু’হাতে সাহায্য করেন। মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়েন। একপর্যায়ে এলাকাটিকে খুবই ভালো লেগেছে বলে প্রচার করতে শুরু করেন তারা। স্থায়ীভাবে বসবাস করবেন বলে বাড়ি নির্মাণের জন্য মূল্যবান জমিও কেনেন। এসবই করা হয় পরিকল্পিতভাবে। এভাবে তারা যেখানেই থাকেন সেখানেই স্বল্প সময়ে ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেন। সবাই তাদের ধনাঢ্য দানশীল ও ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে চিনতে শুরু করে। এভাবে তারা স্থানীয় রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও ওঠাবসা শুরু করেন। এভাবে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহের বাইরে থেকে নির্বিঘ্নে তারা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যান।

 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্ল্যা নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এ ইয়াবা নেটওয়ার্কের পুরো চক্রকে গ্রেফতারে কাজ করছেন ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের বিশেষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম।

তিনি জানান, মানি লন্ডারিং আইনে দায়েরকৃত তিন মামলায় আসামির সংখ্যা ১৭ জন। এদের মধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

গ্রেফতাররা হলেন- নুরুল হক ওরফে ভুট্টো ও তার ভাই নূর মোহাম্মদ, ভুট্টোর ভাগ্নে জালাল উদ্দীন ও বেলাল। এছাড়া এ ইয়াবা ব্যবসার সহযোগী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে আরিফ, আবদুর রহমান নুরুল মোস্তফা, মোহাম্মদ তৈয়ব ও রাশেদুল ইসলামকে।

 

এদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন।

রিমান্ড শেষে তাদের কেউ আছেন জেলে, কাউকে আবার জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে নতুন করে রিমান্ডে আনা হচ্ছে।

 


Comments