প্রথম টেস্টে টসে জিতে ফিল্ডিং। দারুণ ব্যাটিং উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেট হাতে রেখে ইনিংস ঘোষণা করে ৪৯৬ রানে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হার ৩৩৩ রানে।

এ হারের দায় অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম বোলারদের উপর চাপিয়েছিলেন। শুক্রবার থেকে দ্বিতীয় টেস্টে ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। কিন্তু পচেফস্ট্রমের ভুলের পুনরাবৃত্তি ব্লুমফন্টেইন টেস্টেও।

এ ম্যাচেও টসে জিতে ফিল্ডিং, ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা হাঁকালেন চার সেঞ্চুরি। প্রথম দিনই স্কোর বোর্ডে ওঠে ৪২৮ রান। তাই প্রশ্ন উঠেছে মুশফিকের উইকেট বোঝার ক্ষমতা নিয়ে। সঙ্গে প্রশ্ন তার নেতৃত্ব নিয়েও।

কিন্তু মুশফিক মাঠে কোথায় ফিল্ডিং করবে তাও যদি কোচ বলে দেন সেখানে টসে জিতে কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত তো তার একার হতে পারে না!


সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন মাঠে চলে কোচের সিদ্ধান্ত। তাহলে কি কোচের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছে?

এ বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান জানিয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে সবকিছুর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে মুশফিককেই।

তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক মানে দলের দায়িত্ব তার। অধিনায়ক হিসেবে সে যত কিছু বলুক না কেন অধিনায়কের দায়িত্বগুলো কিন্তু তারই পালন করতে হবে। যখন দল ভালো করে তখন কিন্তু অধিনায়কের প্রশংসা করে সবাই। আবার খারাপ করলে প্রশংসা করে না। এটাই স্বাভাবিক। তাই দায়টাও তার।’


ব্লুমফন্টেইন টেস্টেও কিপিং করছেন না মুশফিকুর রহিম। কিন্তু প্রথম দিনে মাঠে বোলারদের আশপাশেও খুব একটা ফিল্ডিং করতে দেখা যায়নি তাকে। বেশিরভাগ সময় ছিলেন বাইরে। মুশফিকের ফিল্ডিং পজিশন ছিল বিস্ময়কর।

সংবাদ সম্মেলনেও ব্যাখ্যা দিলেন আরো ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘আমি একটা ব্যাপার পরিষ্কার করি, আমি ফিল্ডার হিসেবে খুব একটা ভালো না। আমার কোচরা চেয়েছে আমি যেন বাইরে বাইরে ফিল্ডিং করি। কারণ, আমি সামনে থাকলে আমার কাছ থেকে নাকি রান হয়ে যায়। বা আমার হাতে ক্যাচ-ট্যাচ আসলে নাকি (ধরার) চান্স থাকে না।

টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা বলবে, সেটা তো আপনার করতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি, বেশির ভাগ সময় বাইরে বাইরে থাকার। যখন ভেতরে ছিলাম তখন চেষ্টা করেছি, বোলারদের সঙ্গে কথা বলার।’

তার এ বক্তব্যে দ্বন্দ্বটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আছে কিনা বা কোচ অধিনায়কের উপর তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে কিনা তা নিয়ে আকরাম খান বলেন, ‘কোচের সঙ্গে সমস্যা আমরা জানি না। ওতো (মুশফিক) আমাদের এ বিষয়ে কিছু বলেনি। এমন কিছু হলে ওর তো উচিত আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা। অফিসিয়ালি ও আমাদের কিছুই বলেনি।’


এ বিষয়ে আকরাম খান বলেন, ‘আসলে একটি সিরিজ চলাকালে এ ধরনের কথা বলা ঠিক না। এখন মুশফিকের নেতৃত্ব থাকবে কিনা সেটি নিয়ে কথা বলার সময় নয়। এতে করে ওর উপরতো প্রভাব পড়বেই দলের উপরও প্রভাব পড়বে। আমি মনে করি এ নিয়ে সিরিজ শেষে কথা বলা উচিত, সিরিজ চলাকালে নয়।’

এছাড়া আকরাম খান টেস্ট অধিনায়কের উপর আস্থাই রাখতে চান। তিনি বলেন, ‘দেখেন দক্ষিণ আফ্রিকাতে খেলা এত সহজ নয়। এখানে সাকিব নেই, তামিম ইনজুুরিতে। দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই এ কন্ডিশনে আগে খেলেনি। তাই সমস্যা হতেই পারে।

আর আমরাতো সব সময় এক ভাবে ভালো খেলে যাবো না। সব সময় ভালো খেলা কোন দলের পক্ষে সম্ভব নয়। টেস্ট খারাপ হয়েছে আমাদের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার সুযোগ আছে। আমি আস্থা রাখছি দল ভালো করবে। তাই এখন এ ধরনের কথা বলা উচিত নয়।’

 


Comments