শ্রেণীকক্ষ হাটুজলে একাকার। কিন্তু এরই মাঝে শুরু হচ্ছে পরীক্ষা। তাও আবার অনার্স ১ম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। এমনই পরিস্থিতিতে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে পানিতে পা ভিজিয়েই ৪ ঘন্টা পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রায় ৬শতাধিক শিক্ষার্থী।

এমন পরিস্থিতিতে হাটু পানিতেই পরীক্ষার হলে পুরোটা সময় দাড়িয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরা।

শনিবার দুপুর একটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত কলেজ সমূহের ৪বছরের অনার্স কোর্সের ১ম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের পরীক্ষার্থীদের একাংশের পরীক্ষা কেন্দ্র কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে পড়ে। কেন্দ্রের সব রুমেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিজ্ঞান ভবনের নিচতলার কয়েকটি কক্ষেই এমন বৈরী অভিজ্ঞতার শিকার হন শিক্ষার্থীরা।

 

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক, আমরা উদ্ভুত পরিস্থিতির শিকার। সকালেও এতো পানি ছিল না। কিন্তু ১১টার পর হঠাত জোয়ারের মতো পানি ঢুকতে শুরু করে।

বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি তাৎক্ষণিক কোন সিদ্বান্ত দিতে অপারগ হন এবং পরীক্ষা সম্পন্ন করতে অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন, আমি সকল রুমেই গিয়েছি, শিক্ষার্থীদের শান্তনা দিয়েছি।

শ্রেণীকক্ষ উচু না করলে জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী তরতে পারে। ইতিপূর্বে ১৯৯৭ সালে একবার ক্লাসে এমনভাবে পানি উঠে গিয়েছিল।

লাইলাতুন নূর নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, এমন পরিবেশে পরীক্ষায় অংশ নিলে উত্তরপত্রের সাথে মনোসংযোগ বিনষ্ট হয়। আমরা কিভাবে ভাল পরীক্ষা দিব পুরোটা সময় পানিতে পা রাখতে হচ্ছে, সে পানি নোংড়া দূর্গন্ধময়। কি অসহ্য।

 

রাকিবুল ইসলাম নামে আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, একেতো পানিতে বসে পরীক্ষা দিয়েছি, তারপর ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া। ভাবতে পারছিনা এটা কি একটি ভাল ফলাফলের পরিবেশ নাকি সার্কাস।

সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ করে এক শিক্ষক লিখেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কি চায়?……………………. এক সময় সকলে বলতো যন্ত্রনা বিশ্ববিদ্যালয়। যার কারনে সরকার বিভিন্ন কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে আসলো।এরপর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে এটা দেখার কেউ নাই।

**একজন শিক্ষার্থী ভালো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে কি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়?অথচ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আগেই ওনাদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ,আসলে এর পেছনের উদ্দেশ্য কী? জনগনের টাকা হাতিয়ে নেওয়া নয়তো?

**সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুজার ছুটি তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। **সারা দেশে দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়া তখনও ওনাদের পরীক্ষা। আসল কথা হলো ওনারা কি সরকার কে কিছু দেখাতে চাচ্ছেন?????”

এক শিক্ষক মায়মুন শরীফ লিখেন, “এভাবে ভাল পরীক্ষা দেয়া অসম্ভব।এখন প্রশ্ন হল, এদের খারাপ পরীক্ষার দায় কে নিবে?”

 


Comments