জর্ডানের রানি রানিয়া আল আব্দুল্লাহ উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের অমানবিক নির্যাতনের কাহিনি শুনেন এবং তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের নিন্দা জানান।
এপর তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেন।
টুইটার পোস্টে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের একটি ছবি আপলোড করে তিনি বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুঃখ ও নির্যাতনের কথা শুনেছি ও দেখেছি, এটি ভয়ঙ্কর ও হৃদয়বিদারক।’
এছাড়া নিজের ইনস্ট্রাগ্রাম পোস্টে রাণী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ‘গত দুই মাসে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
অনেক বছর ধরেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে বৈষম্য, অবিচার ও নির্যাতনের শিকার। সবচাইতে দুঃখের বিষয় হল, সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি এই সুপরিকল্পিত নিপীড়ন পুরো বিশ্বজুড়ে এখন দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই তাদের দুঃখ মোচন করে অধিকার ও নিরাপত্তা দিতে হবে।’
এছাড়া রানীর অফিসিয়াল ফেসবুকে বলা হয়, ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শিকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে রাণী বাংলাদেশ সফর করেছেন।
মিয়ানমারের এই ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা পরিকল্পিত অত্যাচারের শিকার।’
কুতুপালং ক্যাম্প সফরের পর সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে রানিয়া আবদুল্লাহ বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্যতম ঘটনা। নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অমানবিক। নির্যাতনের বর্ণনা মতে এটি আইয়ামে জাহেলিয়াকেও হার মানায়।
‘বিশ্বব্যাপী জাস্টিস অব ল’ প্রতিষ্ঠা হলেও মিয়ানমার কোনো কিছুতেই তা মানছে না। মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন বন্ধ ও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাধ্য করতে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে। জর্ডান নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে এটি জানাতে আমি এখানে এসেছি।’
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে রাণী রানিয়া বলেন, ‘তথ্যমতে কক্সবাজারের এ এলাকায় এখন স্থানীদের চেয়ে আশ্রিতদের সংখ্যা দ্বিগুণ।
এতে বোঝা যায় নিজেদের নানা দিকে ক্ষতির পরও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ, যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে মানবিকতা দেখিয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, রাণীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিকসহ জর্দান দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।