ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি হিসেবে গত ৪ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পেয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাকে এ পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। তবে নিয়োগের তিন মাসেরও অধিক সময় অতিবাহিত হলেও ভিসি ভবনে উঠতে পারেননি আখতারুজ্জামান।
জানা গেছে, সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ভিসি ভবনটি না ছাড়ায় প্রো-ভিসির বাংলো (বাস ভবন) থেকেই অফিস করেন নতুন ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। ফলে কাজের ক্ষেত্রেও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে।
ভিসি অফিস সংশ্লিষ্টরা জানান, অফিস সময় ছাড়াও একজন ভিসিকে বাস ভবনে বসেই অনেক কাজ করতে হয় । প্রো-ভিসির বাংলো অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় সেখানে সমস্যা হচ্ছে।
জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অসুবিধাতো একটু হচ্ছেই। তবে তিনি (আরেফিন সিদ্দিক) যেহেতু আছেন তাহলে আর কী করার! যদিও অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, নতুন যিনি (আখতারুজ্জামান) এসেছেন তিনি তার বাসা থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং তাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের একটি সূত্র জানায়, গত ৩০ অক্টোবর সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিককে প্রভোস্ট কমপ্লেক্সে একটি বাসা বরাদ্দ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এস্টেট ম্যানেজার সুপ্রিয়া দাস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে জানানো হয়।
চিঠিতে ভিসি ভবন খালি করার লক্ষ্যে শহীদ এম এ মুক্তাদির ভবনের (প্রভোস্ট কমপ্লেক্স) ৬ষ্ঠ তলার বাসাটি বরাদ্দ দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও ১৯৮৬ সনে সিন্ডিকেটে গৃহীত বাসা বরাদ্দের নীতিমালা অনুযায়ী নিজের নামে বরাদ্দকৃত বাসা বুঝে নিয়ে ভিসি ভবন বিশ্ববিদ্যালয়কে বুঝিয়ে দিতেও বলা হয় ওই চিঠিতে। কিন্তু নতুন বাসা বরাদ্দ পাওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও ভিসি ভবন ছাড়েননি আরেফিন সিদ্দিক।
এদিকে বাসা বরাদ্দের চিঠি পাওয়ার ১০-১২ দিন পর ৬ষ্ঠ তলার বাসাটি নিতে অপরাগতা জানিয়ে ওই ভবনের সাত তলার বাসাটির জন্য আবেদন করেন বলেও প্রশাসনিক ভবন সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯২ সালে ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদের পর থেকে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের আগ পর্যন্ত ঢাবিতে যে কয়জন ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্যে মেয়াদ শেষে সর্বোচ্চ ২৭ দিন পর ভিসি ভবনে অবস্থান করেছিলেন অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। আর সর্বনিম্ন ১০ দিন ছিলেন অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী।
এছাড়া অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ২০ দিনের মাথায় বাসা ছাড়েন। আর অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ নতুন ভিসি নিয়োগের পূর্বেই বাসা ছেড়ে দেন। কিন্তু অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক নতুন ভিসি নিয়োগের সাড়ে তিন মাস পরেও এখনো ভিসি ভবন ছাড়েননি।
জানতে চাইলে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিনেন্সে এরকম কোনো বিধান নেই যে ভিসি কিংবা প্রো-ভিসিকে কখন বাসা ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, নতুন যিনি এসেছেন তিনি তার বাসা থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং এতে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বিকল্প সুরাহ হলে আমি ভিসি ভবন ছেড়ে দিবো।