ব্যবসায়ী থেকে চলচ্চিত্রকার, তারপর ধর্মপ্রচারক। সব ক্ষেত্রেই সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি।

বলছি এদেশের জনপ্রিয় তারকা এম এ জলিল অনন্তর কথা। নিজের গুণে পাল্টে যাওয়া এই মানুষটি এখন সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন শান্তির ধর্ম ইসলামের আলো।

ছবির মাধ্যমেও ইসলামের প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরতে চান তিনি। এসব বিষয়ে এই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

এম এ জলিল অনন্ত। স্বল্প সময়ে সর্বক্ষেত্রে সফল একজন মানুষের নাম। ব্যবসায়ী হিসেবে সফলতার জন্য সরকার তাকে একাধিকবার সিআইপি মর্যাদায় অভিষিক্ত করে। ২০১০ সালে পাওয়া যায় চলচ্চিত্রে।

আধুনিক নির্মাণ, গল্প, গান, অভিনয় আর টেকনোলজি প্রবর্তন করে সহজেই তিনি সবার হৃদয়ে আসীন হন। সফল কর্ম কারিগর অনন্তকে চলতি বছর থেকে পাওয়া গেছে নতুন রূপে।

ইসলাম ধর্ম প্রচারের মহান দায়িত্ব নিয়ে অনন্ত সবাইকে শান্তির ধর্ম ইসলামের ছায়াতলে আসার দাওয়াত দিলেন। সর্বস্তরের মানুষ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলে দলে দাওয়াতে শরিক হন। এক্ষেত্রেও অনন্তর সাফল্য অভাবনীয়।

চলতি বছরের ২৯ জুলাই রবীন্দ্র সরোবরে অনন্ত সবাইকে ইসলামের দাওয়াত দেন। সারা দেশে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের পক্ষ থেকে গতকাল এই সফল মানুষটির কাছে জানতে চাওয়া হয় চলচ্চিত্র ছেড়ে হঠাৎ বিপরীত মেরু অর্থাৎ ধর্মপ্রচারে মনোনিবেশ করলেন কেন? তার আত্মবিশ্বাসী জবাব, ইসলাম শান্তির ধর্ম।

ইসলামের প্রতিটি নিয়ম কানুনই মানুষের শান্তির জন্য। আমরা যেন ইসলামের বিধিবিধানগুলো মেনে চলি সেই লক্ষ্যেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশের যুব সমাজকে ধর্মীয় বিশ্বাসের দিকে আহ্বান করছি। তাবলিগ জামাতে যোগ দিয়েছি। জীবন দিয়েছেন আল্লাহ। পৃথিবীতে পাঠানোর প্রধান কারণ হলো তার ইবাদত করা। মক্কায় এটা শিখেছি। যুব সমাজের মাঝে ইসলাম প্রচার করলে তারা আল্লাহকে মেনে চলবেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কে অনুসরণ করবেন। দিনে পাঁচ বার নামাজ আদায় করবেন। অনন্ত বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে আমি আমার কর্তব্য পালন করছি। একজন নায়ক হিসেবে মানুষ আমাকে চেনে এবং অনেক ভক্ত ও দর্শক সৃষ্টি হয়েছে। আমার মনে হয়েছে, ইসলামের সেবা এবং এর শান্তির বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমার এই জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে পারি।

‘তাহলে চলচ্চিত্রে আর ফিরছেন না?’ এর জবাবে এই মহানায়ক বলেন, চলচ্চিত্র ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। ছবি নির্মাণ এবং অভিনয় করব। তা হবে ধর্মীয় ছবি। চলচ্চিত্র হচ্ছে একটি দেশের প্রধান গণমাধ্যম। আর এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই নতুন প্রজন্মকে জানাতে চাই ইসলাম কখনো যুদ্ধ, সন্ত্রাস, অশান্তি, অন্যায় সমর্থন করে না। বর্তমানে ইসলামের নামে বিশ্বে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

আমার ছবির মাধ্যমে আমি এসব বিভ্রান্তি আর অপপ্রচার দূর করতে চাই। আমি সাহাবিদের নিয়ে একটি ছবি নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম। আলেম ওলামাদের কথায় এটি নির্মাণ করা জায়েজ হবে না। তাদের সঙ্গে এখন আলাপ করছি কীভাবে ধর্মীয় ছবি নির্মাণ করে মানুষকে ইসলামের ছায়ায় বেশি করে নিয়ে আসা যায়। অনন্ত বলেন, দেখুন মহান আল্লাহতায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য।

এই পৃথিবী থেকে মানুষ শুধু আমল ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যেতে পারবে না। আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি। কিন্তু আমরা জানি না সেই নামাজ-রোজা কবুল হচ্ছে কিনা। পবিত্র কোরআন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে মানুষকে নামাজের জন্য আহ্বান জানাতে।

আমরা যদি নিজেরা নামাজ দোয়া করার পাশাপাশি অন্যকে এই পথে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসতে পারি তবে সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই তা কবুল করবেন। তিনি বলেন, ধর্ম কর্ম, ব্যবসা বাণিজ্য এবং ধর্মীয় ছবি নির্মাণ নিয়েই জীবন কাটাতে চাই। তার কথায়, আমার ছবিতে নায়িকাকে পোশাক পরিচ্ছদের দিক দিয়ে শালীনভাবে উপস্থাপন করেছি।

আমি আমার দেশের চলচ্চিত্রকে উচ্চ আসনে সমাসীন করার চেষ্টা করে গেছি। দর্শকের কাছে চলচ্চিত্রকে শ্রদ্ধার মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। অনন্ত বলেন, আমি সব সময় সুন্দর এবং শালীনতাকে খুঁজে বেড়াই। আমার সব কাজে সুন্দরের প্রতিফলন রেখে যেতে চাই।

চলচ্চিত্রে আমার চরিত্র হবে একজন পর্দানশীন নারীর : বর্ষা

এদিকে চলচ্চিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে বর্ষা বলেন, অবশ্যই চলচ্চিত্রে অভিনয় করব। আর চলচ্চিত্রে আমার চরিত্রটি হবে একজন পর্দানশীন নারীর। আর এমন চরিত্রে অভিনয় করে নারী জাতির প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে চাই।

নারীরা যাতে ইসলামের নিয়মরীতি অনুযায়ী পর্দানশীনভাবে চলতে পারে চলচ্চিত্রে আমার চরিত্রের মাধ্যমে তাদের সেভাবে উদ্বুদ্ধ করব। আর এভাবে আমাদের চলচ্চিত্রকে আমি শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

 


Comments