সৃজনশীল প্রশ্ন

রফিক দুপুরে ভাত খেতে বসে মুরগীর মাংসের গামলায় একটি বিশেষ মাংসের টুকরো দেখিয়ে বলল, এটি মুরগীর বিশেষ অঙ্গ, যা আমাদের দেহে সবচেয়ে বৃহত্ গ্রন্থি নামে পরিচিত।

(ক) পরিপাক কী? ১

(খ) পরিপাকে দাঁতের ভূমিকা উল্লেখ কর। ২

(গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত মানবদেহের সবচেয়ে বৃহত্ গ্রন্থির কাজ -ব্যাখ্যা কর। ৩

(ঘ) উদ্দীপকে উল্লেখিত মুরগীর বিশেষ অঙ্গের সাথে মানবদেহের বৃহত্ গ্রন্থির গঠন বিশ্লে­ষণ কর। ৪

 

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

(ক) পরিপাকঃ যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জটিল খাদ্যবস্তু বিভিন্ন এজাইমের সহায়তায় ভেঙ্গে মানবদেহের বিপাকীয় ক্রিয়ায় ব্যবহারযোগ্য সরল, তরল ও শোষযোগ্য অবস্থায় পরিবর্তিত হয়, তাকে পরিপাক (Digestion) বলে।

 

(খ) উত্তরঃ

মানুষের মুখের ভিতরে উভয় চোয়ালে চারটি কর্তন, দুটি ছেদন, চারটি অগ্রপেষন ও ছয়টি পেষন দন্ত রয়েছে। কর্তন দন্ত খাদ্য বস্তুকে কাঁটাতে, ছেদন দন্ত ছেদ করতে এবং অগ্রপেষন ও পেষন দন্ত খাদ্য বস্তু চর্বণের কাজ করে পরিপাকে সহায়তা করে থাকে।

 

(গ) উত্তর

উদ্দীপকে উল্লেখিত মানবদেহের সবচেয়ে বৃহত্ গ্রন্থি হলো যকৃত্ (Liver)। নিম্নে এর কাজ উল্লেখ করা হলোঃ-

১. যকৃত্ থেকে পিত্তরস নিঃসৃত হয়ে পিত্তথলিতে জমা হয়, যা পিত্তথলি খাদ্য পরিপাকে বিরামহীনভাবে সরবরাহ করে।

২. রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ যকৃত্ এ গ্লাইকোজেনরূপে সঞ্চিত হয় এবং বিশেষ করে কোন স্থান কেটে রক্ত ক্ষরণ হলে, সঞ্চিত গ্লাইকোজেন প্রয়োজন মতো ভেঙ্গে রক্তে মিশে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৩. যকৃত্ ডিঅ্যামিনেশন প্রক্রিয়ায় অব্যবহূত ও অতিরিক্ত অ্যামিনো এসিড ভেঙ্গে অ্যামিনো গ্রুপ পৃথক করে থাকে। এটি অরনিথিন চক্রের মাধ্যমে ইউরিয়া সৃষ্টি করে।

৪. যকৃত্ এ ভিটামিন সঞ্চিত থাকে। আর এটি রক্তে প্লাজমা প্রোটিনকে সংশ্লেষিত করে।

৫. যকৃত্ লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিনকে ভেঙ্গে বিলিরুবিন ওবিলিভার্ডিন সৃষ্টি করে থাকে।

(ঘ) উত্তরঃ

মুরগী বিবর্তনিক সভ্যতায় ভারী ডানা থাকার কারণে উড্ডয়নে অক্ষম ও গৃহপালিত পাখি। যাদের বিশেষ অঙ্গ আর মানবেদেহের একটি অঙ্গের সাথে তুলনীয়।

মানবদেহের বৃহত্ গ্রন্থি অঙ্গটি উদর গহ্বরের উপরিভাগের ডানদিকের ডায়াফ্রামের ঠিক নিচে ডিওডেনাম ওজন বৃক্কের উপর দিকে পাকস্থলীর ডান পাশে অবস্থান করে থাকে। যা দেখতে লালচে খয়েরী বর্ণের ত্রিকোনাকার অঙ্গ বিশেষ।

এটি যোজককলা দ্বারা আবৃত এবং ফ্যালসিফর্ম লিগামেন্ট নামক মেসেন্টারি দ্বারা ডান ও বাম লোব নামক দুটি প্রধান লোবে বিভক্ত। ডান লোবটি বাম লোব থেকে অপক্ষাকৃত ছয় গুণ বেশি বড়। ডান লোবটির অঙ্কীয় দিকে আবার কোয়াড্রেট লোব এবং কোডেট লোবে বিভক্ত। কলম আকৃতির পিত্তথলিটি কোয়াডেট লোবের নিচে সংযুক্ত থাকে। প্রতিটি লোবিউলে সাইকেলের চাকার স্পোকের মতো অসংখ্য হেপাটিক কোষ বিন্যস্ত থাকে। রক্ত চলাচলের জন্য প্রতিটি লোবিউলের মাঝে সাইনুসয়েড হেপাটিক শিরা,ধমনী ও পোর্টাল শিরা বিদ্যমান থাকে।

একটি হেপাটিক ধমনী, পোর্টাল শিরা ও পিত্তনালীর শাখা লোবিউলগুলোর অন্তর্বর্তী স্থানে দেখা যায়। যকৃতনালী পিত্তনালীর সাথে মিলে অভিন্ন পিত্তনালী গঠন করে। এটি পরে ভ্যাটার এর অ্যাম্পুলা নামক নালীর মাধ্যমে ডিওডেনামে উন্মুক্ত হয়েছে।

 


Comments