মাইগ্রেন হল এমন এক ধরনের সমস্যা, যা যে কোনো সময় আক্রমণ করে, যে কাউকে নিমেষে কুপকাত করে ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে যন্ত্রণা এমন মাত্রা ছাড়ায় যে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে সিংহভাগই যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ খেয়ে কষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেতে চান।

কিন্তু আর নয় ওষুধ! এবার থেকে যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে খেতে হবে এই খাবারগুলো। তাহলেই হবে কেল্লাফতে!

প্রসঙ্গত, নানা করণে মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে। আর সেই কারণগুলির পেছনে যেমন আমাদের জীবনযাত্রা দায়ি থাকে, তেমনি নানা রোগের ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না। তবে আজকাল স্ট্রেস একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে। তাই তো আরো বেশি করে এইসব ঘরোয়া ওষুধগুলিকে সঙ্গে রাখতে হবে। কেন? পরিসংখ্যান বলছে যত দিন যাচ্ছে স্ট্রেস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়াটা জরুরি।

১. আপেল

মাথা যন্ত্রণার সময় কয়েক টুকরো আপেল খেয়ে নিলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে। কারণ আপেলে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর অ্যাসিড-অ্যালকালাইন ব্যালেন্স ঠিক মাত্রায় নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে শরীরের ভেতরে তৈরি হওয়া প্রদাহ কমায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কষ্ট কমতে সময় লাগে না।

২. লবঙ্গ

এতে আছে পেইন-রিলিভিং প্রপার্টিজ যা সারা শরীরের ঠাণ্ডার স্রোত বইয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে কপালে হওয়া প্রদাহকে একেবারে কমিয়ে দেয়। তাই তো এবার থেকে কপালে ঠিপ ঠিপ করলেই অল্প কয়েকটা লবঙ্গ বেটে একটা পরিষ্কার রুমালে রেখে বারে বারে গন্ধ নিতে থাকবেন। এমনটা কয়েক মিনিট করলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

৩. আদা

মাথা যন্ত্রণা কমাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ আদায় আছে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা কপালের ভেতরে থাকা ব্লাড ভেসেলের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নিমেষে মাথা যন্ত্রণা কমাতে দারুন উপযোগি ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এবার থেকে কপালে আগুন জ্বললেই এক কাপ আদা চা বানিয়ে ঝটপট খেয়ে ফলেবেন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!

৪. সেগে পাতা

এই পাতাটি মাথার ব্যথা তো কমায়ই, সেই সঙ্গে আরো নানা ধরনের সমস্যার প্রকোপ কমাতে কাজে লাগে।

৫. পার্সলে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মাথার যন্ত্রণা কমাতে এটি দারুন কাজে আসে। তাই এবার থেকে মাথার যন্ত্রণা হলেই অল্প করে পার্সলে শাকের পাতা খেয়ে নেবেন। নিমেষে কমে যাবে ব্যথা।

৬. বরফের সাহায্য নিতে ভুলবেন না

একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে মাইগ্রেন অ্যাটাকের সময় অল্প পরিমাণ বরফ রুমালে নিয়ে ঘাড়ে ঘষতে থাকলে ধীরে ধীরে কষ্ট কমে যেতে শুরু করে। কারণ এমনটা করলে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই যন্ত্রণা কমতেও সময় লাগে না।

৭. দারুচিনি

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এই মশলাটিকে ‘মিরাকেল স্পাইস’ নামে ডেকে থাকেন। দারুচিনিকে কেন এমন নাম দেওয়া হয়েছে জানা আছে? আসলে দেখতে ছোট্ট হলেও আমাদের শরীরকে চাঙ্গা রাখতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, মাথার যন্ত্রণা কমাতেও দারুচিনি দারুন কাজে আসে।

এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ দারুচিনি পাউডার নিয়ে পরিমাণ মতো পানিতে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানাতে হবে প্রথমে। তারপর সেই পেস্টটা কপালে কম করে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখলেই দেখবেন মাথার যন্ত্রণা উবে যাবে।

৮. অ্যালো ভেরা

এতে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং বেশ কিছু কার্যকরি এনজাইম, যা মাথার যন্ত্রণা এবং একাধিক স্কিনের সমস্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৯. থাইম পাতা

ল্যাভেন্ডার পাতার মতোই এতেও রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লমেটরি প্রপার্টিজ যা প্রদাহ কমায়। তাই মাথায় যন্ত্রণা হলেই থাইম পাতার রস খান। ফল পাবেন হাতে-নাতে।

১০. রোজমেরি

এটি এক প্রকার গুল্ম। এটি দিয়ে বানানো চা খেলে মাথার যন্ত্রণা সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়।

১১. ল্যাভেন্ডার

এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-সেপটিক প্রপার্টিজ, যা যে কোনো ধরনের যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিমাণ মতো গরম পানিতে কয়েকটি ল্যাভেন্ডার পাতা ফেলে ভাপ নিন। দেখবেন অনেক আরাম পাবেন।

১২. মিন্ট পাতা

প্রতিদিন নিয়ম করে মিন্ট পাতা দিয়ে বানানো চা খেলে শুধু মাথায় যন্ত্রণা নয়, সেই সঙ্গে পেটের ব্যথা এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও কমে।

১৩. তুলসি

কয়েকটি তুলসি পাতা নিয়ে হাতে ঘঁষে কপালে লাগিয়ে ফেলুন। আরাম পাবেন। কারণ এই পাতাটির ভেতরে ঠাসা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা এই ধরনের কষ্ট কমাতে দারুন কাজে আসে।

 


Comments