চুরির অভিযোগে এনে একজনকে পেটানো হচ্ছে। আর তার পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন কয়েকজন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ।

এরপর আহত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যান তিনি।

নিহতের নাম মধু। ভারতের কেরালা রাজ্যের পালাক্কাড জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মধু পালাক্কাডের বাসিন্দা। এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, হাত বাঁধা মধুকে পেটানো হচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখছেন কয়েকজন।

এসময় তাদের কেউ কেউ সেলফি তুলছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা প্রতীশ কুমার বলছেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত মধুকে উদ্ধার করে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হই।

তবে কোনো চিকিৎসা দেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

যখন-তখন সেলফি, চিকিৎসার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের!

আজকাল সেলফি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। যা এমন পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যে, বিপজ্জনক সেলফি তোলা থেকেও বিরত হচ্ছে না মানুষ। তাতে প্রাণও যাচ্ছে, তবু হুঁশ ফেরে না। সম্প্রতি সেলফি তুলতে গিয়ে ৬২ তলা ভবন থেকে পড়ে এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়।

এবার এই সেলফি তোলার প্রবণতাকে অসুস্থতা হিসেবেই চিহ্নিত করলেন বিজ্ঞানীরা। তা নিরাময়ের জন্য সঠিক চিকিৎসা দরকার।

সম্প্রতি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে এ কথাই জানিয়েছেন একদল গবেষক। বেশ কিছুদিন আগে এই ধরনের একটি খবর সামনে এসেছিল। সেখানে জানানো হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা সেলফি তোলাকে মানসিক ব্যাধি বলে চিহ্নিত করেছেন। পরে অবশ্য জানা যায়, সে খবর ভুয়া।

গবেষকরা তবু বিষয়টির উপর নজর রাখা ছাড়েননি। যা রটে তা কিছু তো বটে। তারা তাই খতিয়ে দেখেন পুরো বিষয়টি।

জানা যায়, দিনে যারা তিনটে করে সেলফি তোলেন এবং প্রত্যেকটিই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, তারা অ্যাকিউট সেলফাইটিসে আক্রান্ত। আর ঘণ্টায় ঘণ্টায় যদি কেউ সেলফি তোলেন, আর তা পোস্ট করতে থাকেন, তবে তিনি ক্রনিক সেলফাইটিসে আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে এই ধরনের রোগীরা দিনে অন্তত ছটি করে সেলফি তোলেন। কেন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ?

জানা গেছে, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, সামাজিকভাবে নিজেকে সংযুক্ত রাখা, বা নিজের পরিপার্শ্বের রেকর্ড রাখার তাগিদেই এই কাজ করে চলেন। অনেকে আবার মুড ভালো রাখার উপায় হিসেবে এটিকেও দেখেন। আসলে সামাজিক বিচ্ছিন্নতাই ক্রমাগত ঠেলে দিচ্ছে সেলফির দিকে।

বহু মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে শেষমেশ এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। তবে এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ঠিক কী কারণে এরকম একটি ব্যবহারিক বিকৃতি বা অবসেসিভ ডিসঅর্ডারে স্বীকার হচ্ছে মানুষ, তার মূল খোঁজা প্রয়োজন বলেই মত বিজ্ঞানীদের। 

 


Comments