নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মশিউর রহমান বাবলুর ছেলে তানভীর রহমান মিছিলের বৌভাত অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া তানভীর রহমান মিছিল ও তারভাইকে পুলিশ আটক করেছে। শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। চাঁচকৈড়ে বিয়েবাড়ি এলাকায় এখন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, মশিউর রহমান বাবলুর বড় ছেলে তানভীর রহমান মিছিলের (২৬) বিবাহ অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয়। নববধূসহ আত্মীয়স্বজন সবাইকে নিয়ে মশিউর রহমান বাবলু সন্ধ্যার আগেই চাঁচকৈড়ে তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।

শুক্রবার দুপুরে ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় দেড় হাজার অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। বাবলু রাতভর রান্নাবান্নার আয়োজন ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য চেয়ার-টেবিল সাজানোর তদারকি করেন।

হঠাৎ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুরুদাসপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে ওই বিয়েবাড়িটি ঘিরে ফেলে বৌভাতের আয়োজন বন্ধ করতে বলে। পুলিশ রান্না করার জন্য চুলায় পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দেয়। এ সময় তারা বাবলুকে খুঁজতে থাকে এবং কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল ভাঙে বলেও এলাকাবাসী জানান।

একপর্যায়ে বিয়েবাড়িতে অবস্থানরত বিএনপি নেতা বাবলুর ভগ্নিপতি গুরুদাসপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. আবদুল খালেক মোল্লা এর প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং ওই বাড়িতে পুলিশি পাহারা বসায়।

মশিউর রহমান বাবলু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। পরে বেলা ৩টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের কাছিকাটা এলাকায় একটি প্রাইভেট গাড়ি থেকে বড় ছেলে নববিবাহিত তানভীর রহমান মিছিল ও তার ছোট ছেলে মিহাল রহমানকে আটক করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মশিউর রহমান বাবলু মোবাইল ফোনে জানান, শুধুমাত্র বিএনপি করার অপরাধেই বিয়ের ঠিক পরদিন বৌভাত পণ্ড করে নববিবাহিত ছেলে তানভীরসহ দুই ছেলেকে আটক করা হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, সেখানে তারও দাওয়াত ছিল তবে কেন প্রশাসন এ ধরনের কাজ করেছে তারও আমার বোধগম্য নয়।

গুরুদাসপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাস জানান, কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান পণ্ড করা বা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা পুলিশের কাজ নয়। বাবলুর বাড়িতে শুক্রবার সকালে জামায়াত-বিএনপির নেতারা বসে নাশকতার গোপন বৈঠক করছিল এমন খবরেই তারা ওই বাড়িতে অভিযান চালান।

তবে পুলিশের খবর পেয়ে বাবলু পালিয়ে গেলেও বৈঠকে থাকা আবদুল খালেক মোল্লাকে তারা সেখান থেকেই আটক করেছেন।

এ ব্যাপারে নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, শুধুমাত্র বিএনপি করার কারণেই বাবলুর ছেলের বিয়ের ঠিক পরদিন বৌভাত অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়ে বাবলুকে ধরতে না পেরে তার ভগ্নিপতি জামায়াত নেতা মো. আবদুল খালেক মোল্লাকে আটক করে।

পরে পুলিশ নববিবাহিত তানভীরসহ দুই ভাইকে আটক করে যার নিন্দা জানানোর ভাষা তার জানা নেই বলে জানান।

তিনি প্রশ্ন করে বলেন, দেশে বসবাসকারী বিএনপি নেতাকর্মীদের কি এখন সামাজিক কর্মকাণ্ড করাও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে?

 


Comments