অনিন্দ্য সুন্দরী এক যাত্রী বিমানে প্রবেশ করে তার আসনটি খুঁজতে লাগলেন। তিনি লক্ষ করলেন তার আসনটি এমন একজন যাত্রীর পাশে যে ভদ্রলোকের দুটি হাত নেই।
সুন্দরী নারী হাত বিহীন, পঙ্গু ঐ যাত্রীর পাশে বসতে দ্বিধাবোধ করলেন। তখন তিনি বিমানবালাকে ডাকলেন এবং বললেন যে তিনি এই ধরনের মানুষ পছন্দ করেন না এবং তিনি এই লোকের পাশে বসে শান্তিতে ভ্রমণ করতে পারবেন না। তাই তার আসনটি বদল করে দিতে বললেন।
বিমানবালা মহিলার, যাকে দেখতে এতো সুন্দর ও সদাচারী লাগছে তার এহেন আচরণে বিস্মিত হলেন। হোস্টেজ তারপরও মহিলাকে ধৈর্য ধরতে বললেন ও অন্য কোন সীট খালি আছে কিনা দেখতে গেলেন।
অনেক খোঁজার পরও ইকনোমি বা সুলভ শ্রেণিতে কোন আসন খালি পাওয়া গেল না।
বিমানবালা সুন্দরীর কাছে ফেরত আসলেন এবং বললেন, “কোন আসনতো খালি পেলাম না। কিন্তু আমাদের পলিসি হোল যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা। ঠিক আছে আমি পাইলটের সাথে কথা বলে দেখি প্রথম বা শোভন শ্রেণিতে কোন সীট ব্যবস্থা করা যায় কি’না”।
এই বলে তিনি চলে গেলেন এবং কিছুক্ষণ পর ফেরত আসলেন এবং বললেন, “ম্যাডাম, আপনার এই অস্বস্থির জন্য আমরা দুঃখিত; এই পুরো জাহাজে একটি মাত্র আসন খালি আছে এবং তা প্রথম শ্রেণিতে। আমি আমাদের টীমের সাথে কথা বলেছি এবং আমরা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। আর তা হলো একজন যাত্রীকে ইকোনমি থেকে প্রথম শ্রেণিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। এবং এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের কোম্পানির ইতিহাসে এই প্রথম”।
এই শুনে সুন্দরী মহিলাটি পরমানন্দ অনুভব করলেন।
পরক্ষনেই, বিমানবালা বাহুবিহিন লোকটির দিকে ফিরলেন এবং বললেন, “স্যার, আপনি কি একটু উঠে আসবেন ফার্স্ট ক্লাসে? আমরা আপনাকে এহেন অসদাচারী যাত্রীর পাশে ভ্রমণ করতে দিতে চাই না”।
এই শুনে জাহাজের সকল যাত্রী একসাথে হাততালি দিয়ে উঠলো। এই অবস্থায় সেই সুন্দরী নারী যাত্রী যারপরনাই লজ্জিত হলেন এবং তার নির্ধারিত আসনে বসে পড়লেন। হাতবিহিন ভদ্রলোকটি এতক্ষণ সবই অবলোকন করছিলেন।
এবার তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি একজন সৈনিক, দেশ-সেবক; কাশ্মীর যুদ্ধে দেশের জন্য লড়ে আমার দু হাত হারিয়েছি। প্রথম যখন আমি এই সুন্দরীর কথা শুনি তখন আমার মনে হয়েছে এই প্রকৃতির মানুষের জন্যই কি আমি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি! কিন্তু আজ এই বিমান কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত দেখে আমার গর্ব হচ্ছে”!
এই বলে তিনি হেঁটে চলে গেলেন ফার্স্ট ক্লাস কামরায়।
ম্যোরাল অব দ্যা স্টোরীঃ আমরা যা দেখি তাতে নয়, সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে মানুষের মনে আর সুচিন্তায়।
M Ahsan Ullah Khan; অনুবাদকঃ শরীফুল হক।