প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, মনোযোগ দিয়ে আলোচিত বিষয়গুলো অনুধাবন করার চেষ্টা করো।

হরমোন : যে সকল রাসায়নিক বস্তু কোষে উত্পন্ন হয়ে উত্পত্তিস্থল থেকে বাহিত হয়ে দূরবর্তী স্থানের কোষের কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে তাকে হরমোন বলে।

ফাইটো হরমোনঃ উদ্ভিদ দেহে উত্পাদিত যেসব জৈব রাসায়নিক পদার্থ অতি অল্প ঘনত্বে বিদ্যমান থেকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে তাকে ফাইটো হরমোন/বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক পদার্থ বলে।

বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক পদার্থ দুই ধরনের, যথা-

বৃদ্ধি সহায়ক পদার্থ- অক্সিন, জিব্বেরেলিন, সাইটোকাইনিন।

বৃদ্ধি রোধক পদার্থ- অ্যাবসিসিক এসিড/ ডরমিন, ইথিলিন।

অক্সিনঃ অক্সিন এক ধরনের এসিড ধর্মী জৈব যৌগ যা উদ্ভিদের মূল ও কাণ্ডের শীর্ষভাগে উত্পন্ন হয়। চার্লস রবার্ট ডারউইন এ হরমোন প্রথম আবিষ্কার করেন।

কাজ ও প্রভাব :

অক্সিন কোষের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে।

শীর্ষ প্রকটতা সৃষ্টি করে।

মূল সৃষ্টির সূচনা করে, ফলে মূলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

বীজহীন ফল সৃষ্টিতে সহায়তা করে।

ফলের অকাল ঝরে পড়া রোধ করে।

কোনো কোনো অক্সিন আগাছা দমনে ব্যবহূত হয়।

জিব্বেরেলিনঃ জিব্বেরেলিন এক ধরনের বৃদ্ধি সহায়ক ফাইটোহরমোন। এরা উদ্ভিদের বীজপত্র ও পাতার বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে অবস্থান করে।

কাজ ও প্রভাব :

জিব্বেরেলিন কান্ডের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে।

বীজের ও কুঁড়ির সুপ্ততা ভঙ্গ করে।

বীজের অঙ্কুরোদগমের হার বাড়াতে সহায়তা করে।

গাছে ফলের সংখ্যা বাড়াতে সহায়তা করে।

উদ্ভিদের ফুল ফোটাতে সহায়তা করে।

ফ্লোরিজেন : ফ্লোরিজেন উদ্ভিদের ফুল উত্পন্নকারী একটি ফাইটোহরমোন। এটি পাতায় উত্পন্ন হয় এবং তা পত্রমূলে স্থানান্তরিত হয়ে পত্র মুকুলকে পুষ্পমুকুলে পরিণত করে।

ইথিলিন : ইথিলিন একটি গ্যাসীয় পদার্থ। এ হরমোনটি ফুল, ফল, পাতা, বীজ ও মূলে দেখা যায়। এর প্রভাবে চারা গাছের বিকৃত বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।

অ্যাবসিসিক এসিড : এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধিরোধক ফাইটো হরমোন।

কাজ ও প্রভাব : এর প্রভাবে উদ্ভিদের পাতা ঝরে যায়।

কুঁড়ি ঝরে যায়।

কুঁড়ির বৃদ্ধি রহিত হয়।

ট্রপিক চলন :

আলো, ভূমি, পানি ও রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গের চলন ঘটে। এরূপ চলনকে উদ্ভিদের ট্রপিক চলন বলে। কিছু কিছু অভ্যন্তরীণ ও বহি:উদ্দীপক উদ্ভিদ দেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, ফলে উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে ও চলন সংঘটিত হয়।

যেমন- আলোর প্রভাবে উদ্ভিদের কান্ডের আলোর দিকে চলন।

স্নায়ুকোষ ও নিউরন : স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কার্যকরী একক কে নিউরন বলে। এটি মানব দেহের দীর্ঘতম কোষ। নিউরন প্রধানত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা- ক. কোষদেহ খ. প্রলম্বিত অংশ

কোষদেহঃ নিউরনের কোষদেহ গোলাকার, ডিম্বাকার বা তারকাকার হতে পারে। কোষ ঝিল্লি, সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস নিয়ে গঠিত। এই কোষে কোনো সেন্ট্রিওল থাকে না তাই স্নায়ুকোষ বিভাজিত হয় না।

প্রলম্বিত অংশ : কোষদেহ থেকে উত্পন্ন শাখা-প্রশাখা গুলোকে প্রলম্বিত অংশ বলে। এটি আবার দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা-

ডেনড্রাইট অ্যাক্সন

ডেনড্রাইট : কোষদেহের চারিদিক থেকে উত্পন্ন একাধিক ছোট ছোট শাখাকে ডেনড্রন বলে। ডেনড্রন থেকে সৃষ্ট শাখাগুলোকে ডেনড্রাইট বলে। ডেনড্রাইট স্নায়ু তাড়না কোষদেহে প্রেরণ করে।

 


Comments